সর্বশেষ সংবাদ

আপনার প্রিয় উখিয়া নিউজ শীঘ্রই নতুন নামে আত্নপ্রকাশ করতে যাচ্ছে...UNC............ www.ukhianews.com

ইনানী পাহাড়ে মাটি বাণিজ্য

কক্সবাজারের পর্যটন স্পট উখিয়ার উপকূল বিস্তীর্ণ সবুজে ঘেরা ইনানীতে পাহাড়ের মাটি কেটে বাণিজ্য করছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। সৈকত এলাকাজুড়ে গড়ে ওঠা ব্যক্তি-মালিকানাধীন বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি সড়ক সংস্কার কাজে মাটি ভরাটের জন্য ইনানীর পাহাড় কেটে মাটি আহরণের ফলে সৃষ্ট সমুদ্র সংলগ্ন পাহাড়গুলো অরক্ষিত
হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য।

প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন হয়ে সম্ভাবনাময় ইনানীর অপরূপ সৌন্দর্য হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। একাধিক সূত্র বলছে, কক্সবাজারের সর্ব বৃহত্তম বনাঞ্চল উখিয়া উপজেলার ইনানী বন রেঞ্জের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর মোট বনভূমির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই পাহাড় টিলা ও চূড়া সমতুল্য বন সম্পদ। এতে হাতি, বাঘ, হরিণ, বানর, বন মোরগসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাণী বসবাস করে। আশির দশক থেকে বন সম্পদের অবাধ ব্যবহার, লুটপাট বাণিজ্যের ধারাবাহিকতায় ইনানীর অভয়ারণ্য বর্তমানে অরক্ষিত বললেই চলে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি প্রতিরোধে বর্তমান সরকার বন সম্পদের উন্নয়ন, পাহাড় ধ্বংস প্রতিরোধ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কিন্তু বন আইন সংশোধন করে কঠোর নীতিমালা বাস্তবায়ন করলেও সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে নির্বিচারে বন সম্পদ ও পাহাড় কেটে মাটি লুটপাট অব্যাহত রয়েছে। কক্সবাজার কলাতলী থেকে টেকনাফের নাইট্যং পাহাড় পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার বিশাল বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন প্রকৃতির সৃষ্টি বেড়িবাঁধ বর্তমানে সম্পূর্ণ অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, পাহাড় ও সমুদ্রের মধ্যবর্তী এলাকার কয়েক হাজার একর ভূ-সম্পত্তি দেশের সরকারি বেসরকারি আমলা ও বিত্তবান শিল্পপতিরা চড়ামূল্যে ক্রয় করে সেখানে অপরিকল্পিত ব্যক্তিমালিকানাধীন হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজসহ বিভিন্ন সৌখিন আবাসস্থল গড়ে তুলছে। আর এসব স্থাপনা ভরাট করার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ইনানীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা সুউচ্চ পাহাড়ের মাটি। পাশাপাশি এলজিইডি সড়ক সংস্কার ও ভরাট কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে পাহাড় কাটা মাটি ব্যবহার করছে।


ফলে সমুদ্র সংলগ্ন পাহাড় দিন দিন অবক্ষয়ের পথে ধাবিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ইনানী বন রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বিট কর্মকর্তার সঙ্গে এ ব্যাপারে একাধিকবার মুঠোফোনে আলাপ করার চেষ্টা করলেও তাদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করে বনসম্পদ রক্ষা ও জীববৈচিত্র্যের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য শেড, বন বিভাগ ও আরণ্য
ফাউন্ডেশন কাগজে-কলমে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ইনানীর ১০ হাজার হেক্টর বন ভূমিতে প্রস্তাবিত জাতীয় উদ্যান করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে। কিন্তু ওই কাজের কোন অগ্রগতি হয়নি। সাইনবোর্ড সর্বস্ব জাতীয় উদ্যান নামে আছে, কাজে নেই। ২০১৩ সালের মধ্যে উক্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, ‘চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী’। এলাকার কাঠচোর ও মাটি সন্ত্রাসীদের আত্মসামাজিক উন্নয়নে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা সত্ত্বেও তারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বন সম্পদ ধ্বংস ও পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে। তিনি বলেন, উক্ত প্রকল্পের সঙ্গে বন বিভাগ জড়িত থাকার সত্ত্বেও কিভাবে মাটি পাচার হয় তা আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে জেলা বন বিভাগীয় কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণ দাশের সঙ্গে আলাপ হলে তিনি বলেন, পাহাড় কাটার ঘটনা পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই: